নমস্কার দর্শক বন্ধুরা অমৃত কথা এই ওয়েবসাইটে আপনাদের জানাই সুস্বাগতম। ভারতীয় দর্শন শাস্ত্র এবং বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজা আর্চনা এই ওয়েবসাইটের প্রধান বিষয়বস্তু।
বন্ধুরা সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর এই কার্যগুলি করলে গৃহে দরিদ্রতা আসতে পারে না। বন্ধুরা ইতিমধ্যেই নতুন বছর শুরু হয়েছে। এই কারণে আমাদের প্রত্যেকেরই উচিত এই নতুন বছরে কিছু সংকল্প গ্রহণ করা। এরই সাথে আমাদের প্রত্যেকেরই উচিত এই নতুন বছরে নিজেদের কিছু লক্ষ্য পূরণ করা। এর জন্য সর্বপ্রথম প্রয়োজন নিজের লক্ষ্য তৈরি করা এবং তা এই নতুন বছরের কত দিনের মধ্যে পূরণ করতে চাই সেটি লিখে রাখা। বন্ধুরা শুধুমাত্র নিজের লক্ষ্য তৈরি করলেই হবে না, এই লক্ষ্য পূরণের জন্য আমাদের কঠোর পরিশ্রম ও কর্ম করা খুবই প্রয়োজন।
বন্ধুরা অনেক সময় আমাদের সাথে এমনটা হয় যে আমরা কর্ম করতে চাই কিন্তু বিভিন্ন সাংসারিক চিন্তাধারায় জর্জরিত হয়ে আমাদের কর্মটি করে উঠতে পারি না। এই কারণেই বন্ধুরা আমাদের প্রতিদিনের জীবনে ঘুম থেকে ওঠার পর কিছু সাধারণ অভ্যাস আমাদের করা প্রয়োজন। এই অভ্যাসগুলি আমাদের মধ্যে পজেটিভ শক্তি আনবে, যার ফলে আমরা সাংসারিক মোহ মায়ায় আকৃষ্ট না হয়ে নিজেদের সঠিক কর্মটি করে উঠতে সক্ষম হব। আর বন্ধুরা আপনারা সকলেই জানেন ঠিকঠাক ভাবে কর্ম করলে কোনো সময়ই অন্নের অভাব কিংবা অর্থের অভাব হয় না।
তো চলুন বন্ধুরা জেনে নেওয়া যাক সেই কর্মগুলো সম্পর্কে যা প্রত্যেকেরই সকালবেলায় ঘুম থেকে উঠে করা উচিত -
বন্ধুরা সর্বপ্রথম আপনাদের সঙ্গে যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবো তা হল - সকালবেলায় তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে ওঠা। বন্ধুরা আমাদের হিন্দু ধর্ম শাস্ত্রে বলা হয়েছে ব্রাহ্মমুহূর্তে ঘুম থেকে উঠলে খুবই লাভজনক ফল পাওয়া যায়। বন্ধুরা সূর্য ওঠার ২ ঘন্টা আগের সময়কে ব্রহ্ম মুহূর্ত বলা হয়। এই ব্রহ্মমুহূর্তে ঘুম থেকে ওঠার কারণ হচ্ছে দিনে শুরুতে নিজের কর্ম শুরু করার পূর্বে নিজের শরীরের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে হবে অর্থাৎ চটজলদি দ্রুত ঘুম থেকে ওঠার পর আমাদের প্রতিদিন সকালের দাঁত মাজা, স্নান করা ইত্যাদি কাজগুলি সেরে নিতে হবে। বন্ধুরা এই প্রসঙ্গে আপনাদেরকে বলি - সকালবেলায় ঘুম থেকে ওঠার পর বিছানা ছাড়ার পূর্বে বিছানায় বসেই আপনি একবার ভগবানের স্মরণ করে নেবেন এবং আপনি যে এই নতুন দিনটি দেখতে পারলেন তার জন্য ভগবানকে কৃতজ্ঞতা জানান।
বন্ধুরা এরপর দ্বিতীয়ত যে বিষয়টি নিয়ে আপনাদের সঙ্গে আলোচনা করব তা হল - সকালবেলায় দ্রুত স্নান করে নেওয়ার পর সূর্যদেবের উদ্দেশ্যে জল প্রদান করুন। সূর্যদেবের উদ্দেশ্যে জল দান করলে সূর্যদেব প্রসন্ন হন এবং তিনি আমাদের আশীর্বাদ করেন যার ফলে আমাদের মধ্যে পজিটিভ এনার্জি আসে। আর বন্ধুরা এই পজেটিভ এনার্জি আমাদের সারাদিন কর্ম করতে ব্যাপকভাবে সাহায্য করে। বন্ধুরা এক্ষেত্রে সূর্যদেবকে জলদান করার সময় -
"ওম আদিত্য নম্: "
এই মন্ত্রটি আপনি মনে মনে জপ করতে পারেন। বন্ধুরা এই মন্ত্রটি জপ করার সঙ্গে সঙ্গে নিজের মুখ সবসময় পূর্ব দিকেই রাখা উচিত। কারণ সকালবেলায় সূর্য পূর্ব দিক থেকেই উদিত হয়।
বন্ধুরা এরপর আপনাদের সঙ্গে তৃতীয় যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব তা হল - ধ্যান করা। আমরা সকলেই জানি আমাদের জীবনের ধ্যানের কতটা গুরুত্ব রয়েছে। এই ধ্যানের গুরুত্ব সম্পর্কে মহর্ষি পতঞ্জলি তার অষ্টাঙ্গ যোগেও বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছেন। বন্ধুরা এই ধ্যান করার মাধ্যমে আমরা নিজেদের মনকে শান্ত করতে পারি। আর এই শান্ত মনই আমাদের একটি দিকে ফোকাস রাখতে সাহায্য করে। যার ফলে যখন আমরা সকালবেলায় ধ্যান করার পরবর্তী পর্যায়ে আমাদের কর্ম করতে যাই তখন আমরা সেই কর্মে নিজের পুরো ফোকাস রাখতে পারি।
বন্ধুরা এরপর চতুর্থ যে কাজটি আমাদের প্রত্যেকেরই অবশ্যই করা উচিত তা হল - পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করা। এই পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করার মাধ্যমে আমরা একাধিক রোগব্যাধির থেকে দূরে থাকতে পারবো। বিভিন্ন পেটের রোগের সমস্যা এতে দূর হবে। শুধু তাই নয় বন্ধুরা, এরই সাথে আমাদের সকালে ভালো ও পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করতে হবে। মনে রাখবেন বন্ধুরা সকালের খাবারটি পুষ্টিকর খাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা অনেকেই এমন রয়েছি যারা সকালে হালকা খাবার খাই এবং দুপুর বেলায় ও রাত্তিরে ভারী খাবার গ্রহণ করি। বন্ধুরা এমনটা করা একেবারেই উচিত নয়। কারণ সকালের খাবারই প্রধান। এই সকালের খাবারই আপনাকে সারা দিনে কর্ম করার জন্য শক্তি প্রদান করবে। এই কারণেই বন্ধুরা সব সময় সকালে ভারি খাবার গ্রহণ করুন এবং দুপুরে একজন মধ্যবিত্ত মানুষের মতো খাবার গ্রহণ করুন। আর সবশেষে রাত্তিরে হালকা খাবার গ্রহণ করুন। কেননা বন্ধুরা রাত্তিরে আমাদের কোন কর্ম করার তেমন প্রয়োজন পড়ে না যেই কারণে ওই খাবারটি আমাদের সঠিকভাবে হজম হতে পারে না। এই কারণেই বন্ধুরা আমাদের প্রতিদিন এই বিষয়গুলি মেনে চলা উচিত।
বন্ধুরা এরপর পঞ্চম অর্থাৎ সর্বশেষ যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব তা হল - নিজের কর্ম করা। ধরুন বন্ধুরা আপনি প্রতিদিন সকাল ৭ টায় ঘুম থেকে ওঠেন। এর পরিবর্তে আপনি যদি এখন থেকে এই সাতটার বদলে তার তিন ঘণ্টা আগে ঘুম থেকে ওঠেন তাহলে আপনি সারা বছরে ১০৯৫ ঘন্টা বাঁচিয়ে নেবেন। আর আগামী ১০ বছরের মধ্যে ১ বছর ২ মাস ২৫ দিন বাঁচাতে পারবেন আপনি। এই এত বিপুল পরিমাণ সময় আপনি যদি আপনার কর্মের ক্ষেত্রে দেন তাহলে সে ক্ষেত্রে আপনার কর্মে আপনার অবশ্যই উন্নতি লাভ ঘটবেই ঘটবে। আপনার কর্মের প্রতি আপনার একাধিক স্কিল বৃদ্ধি হবে। শুধু তাই নয় আপনি একাধিক নতুন জিনিসও শিখতে পারবেন এই সময়ের মধ্যে। বিভিন্ন নতুন কিছু করার উদ্দেশ্যে এই সময়টিকে আপনি কাজে লাগাতে পারেন। তাহলে বন্ধুরা আপনারাই বলুন সকালে দ্রুত ঘুম থেকে উঠে নিজের কর্মের প্রতি গুরুত্ব দেওয়া উচিত নাকি উচিত নয়! বন্ধুরা একটি কথা মনে রাখবেন যে ব্যক্তি নিজের সকালের ঘুমকে হারাতে পারবেনা, সে ব্যক্তি জীবনে কখনো উঠে দাঁড়াতে পারবে না।
আশাকরি বন্ধুরা এই নতুন বছরে আপনারা এই অভ্যাস গুলি আপনাদের জীবনে অবশ্যই আনবেন। এই অভ্যাস গুলি করার ফলে আপনার জীবন একটি সুন্দর রুটিন এর মাধ্যমে পরিচালিত হবে। যার ফলে আপনার কখনো আর্থিক সংকট দেখা যাবে না এবং আপনি সর্বদাই উন্নতির দিকে এগিয়ে যাবেন। এই কারণেই বন্ধুরা সকালে উঠে এই কার্যগুলি অবশ্যই করা উচিত।
তো বন্ধুরা আশাকরি লেখাটি পড়ে আপনারা সমৃদ্ধ হয়েছেন। ভালো লাগলে আপনজনের উদ্দেশ্যে অবশ্যই শেয়ার করুন। আজ এখানে শেষ করলাম।
নমস্কার, ধন্যবাদ। ঈশ্বর আপনার মঙ্গল করুক।
আরো পড়ুন:- শ্রীকৃষ্ণর দ্বারা বলা কলি যুগের পাঁচটি সত্য? CLICK HERE
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
যদি আপনার কোনরূপ কোন প্রশ্ন থাকে কমেন্ট বক্সে অবশ্যই জানাবেন । পরবর্তী আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করে রাখবেন। এবং সকলের উদ্দেশ্যে শেয়ার করবেন।
If you have any questions or queries then comments in the comment box. To get regular updates subscribe us and please share this wisdom and knowledge.
( Please don't enter any spam link in the comment box.)
Thank You very much.
অমৃত কথা