নমস্কার দর্শক বন্ধুরা অমৃত কথা এই ওয়েবসাইটে আপনাদের জানাই সুস্বাগতম। ভারতীয় দর্শন শাস্ত্র এবং বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজা আর্চনা এই ওয়েবসাইটের প্রধান বিষয়বস্তু।
বন্ধুরা ঈশ্বর আমাদের সঙ্গে সবসময় সম্পর্ক বজায় রাখেন এবং প্রত্যেক মুহূর্তে আমাদের চারিদিকে থাকেন। কিন্তু, এতটা পরিমাণে আমাদের পাশে থাকার পরও আমাদের তার উপস্থিতি সম্পর্কে বিশ্বাস হয় না। অনেক পূজা পাঠ করার পরও অনেকবারই ভক্তের ঈশ্বরের উপস্থিতি সম্পর্কে জানা থাকে না। আর প্রভুর দর্শন না পাওয়ার ফলে ভক্ত নিরাশ হতে থাকে। এর সব থেকে বড় কারণ হচ্ছে আমাদের এমন কিছু সূক্ষ্ম বিষয়ের বা কিছু সংকেতের বোধই নেই যা মূলত ঈশ্বরের সংকেত হয়ে থাকে। এই সংকেত গুলি না বোঝার কারণে আমাদের সম্পর্ক ঈশ্বরের উর্যার সঙ্গে হয় না। তো আজকে আমরা এই লেখাটিতে আলোচনা করব এই সংকেতগুলির মধ্যে পাঁচটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ঈশ্বরের সংকেতের সম্পর্কে। যার মধ্যে যদি একটি সংকেতও আপনি পেয়ে থাকেন তাহলে বুঝবেন মহাদেবের কৃপা আপনার উপর রয়েছে এবং তিনি প্রত্যেক মুহূর্তে আপনার সঙ্গে রয়েছেন। আর এই সংকেত পাওয়ার সাথে সাথেই আপনাকে আপনার পূজা পাঠ তথা আপনার সাধনা আরও গুরুত্ব দিয়ে করা শুরু করে দিতে হবে। আর আপনাকে এটা বুঝে নেওয়া দরকার আপনি খুবই ভাগ্যবান। কেননা আপনি আপনার প্রভুর সংকেত কে বুঝতে পেরেছেন। তো বন্ধুরা চলুন সেই সংকেত গুলি সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
প্রথম সংকেত:- যখন ভগবান শিব কারো উপর কৃপা করেন তখন সেই ব্যক্তি ভবিষ্যতে হতে চলা ঘটনা পূর্ব দৃষ্টিতে দেখতে পান। বিশেষ করে সেই ব্যক্তি স্বপ্নের মাধ্যমে পূর্বাভাস পান। বন্ধুরা আমাদের চেতন মন আমরা জেগে থাকাকালীন সক্রিয় থাকে। কিন্তু অন্যদিকে আমাদের অবচেতন মন সর্বদাই সক্রিয় থাকে। আর নিদ্রায় থাকাকালীন সময়ে যা কিছু আমরা স্বপ্ন দেখে থাকি সেগুলি অবচেতন মনই আমাদের দেখিয়ে থাকে। আর এই যে স্বপ্নগুলি হয়ে থাকে এগুলি একটি ব্যক্তির প্রবল ইচ্ছা, সমস্যা ও লালসার পরিণাম হয়ে থাকে। কিন্তু যখন এক ব্যক্তি নিরন্তর শিব সাধনায় মত্ত থাকেন কিংবা শিবের ভক্তিতে লিন থাকেন তো এমন ব্যক্তির মন ও মস্তিষ্ক অদ্ভুত উর্যায় ভরে ওঠে। ব্যক্তির আধ্যাত্মিক শক্তি বেড়ে ওঠে ও ব্যক্তির উর্যা কেন্দ্রিত হয় এবং ব্যক্তির দেখার দৃষ্টি প্রবল হয়ে ওঠে। আর এমত অবস্থায় অবচেতন মন ব্রহ্মাণ্ডে ছড়ানো দিব্যশক্তির উর্যার সম্পর্কে চলে আসে ও ভগবান শিবের সেই শাশ্বত সত্তার উর্যার সঙ্গে যুক্ত হয়ে যায়। আর এমত অবস্থায় যেই স্বপ্ন আসে তা সত্য হয়ে ওঠে। ভগবান শিবের মত এমন পরম শক্তির সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পর যে সকল স্বপ্ন ব্যক্তি দেখেন আর বিশেষ করে যে সকল স্বপ্ন ব্রত মুহূর্তে ব্যাক্তি দেখে থাকেন সেটা ভবিষ্যতের মুহূর্তের পূর্বাভাস হয়ে থাকে। এটা শুধুমাত্র ভগবান শিবের কৃপাতেই সম্ভব যে, ব্যক্তি নিজের মধ্যের অসীমিত সম্ভাবনা গুলিকে স্পর্শ করতে লাগে। আর এরকম পূর্বাভাস ব্যক্তির না তো শুধু স্বপ্নতে বরং যেকোনো সময়েই হতে পারে। যা সাধারণ চেতনা দ্বারা অনুভব করা একদমই অসম্ভব। তো বন্ধুরা এটা হল শিব কৃপার খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি সংকেত।
দ্বিতীয় সংকেত:- ভগবান শিবের কৃপা দ্বিতীয় সংকেত হলো যেই বাণী আপনি বলে থাকেন না কেন তা সত্য হয়ে ওঠে। বিশেষ করে আপনি যখন ধ্যান মুহূর্তে রয়েছেন তো সেই সময় মনে যদি কোন আকস্মিক বিচার এসে বসে কিংবা ধ্যান করার পরেই যদি আপনি কিছু বলে থাকেন তা বাস্তবে ঘটিত হয়ে থাকে। এটাও শিব কৃপার বড় একটি সংকেত। এর পেছনের কারণ হলো যখন আপনি সাধনার অত্যন্ত গভীরে পৌঁছে যান তখন অন্তর মনে ছেয়ে থাকা নেগেটিভ বিচার ধীরে ধীরে শেষ হতে থাকে ও মন নির্মল হয়ে ওঠে। আপনার শরীরের চক্র বিশেষ করে আজ্ঞা চক্র, অনাহত চক্র ও বিশুদ্ধ চক্র জাগ্রুক হয়ে ওঠে এবং ঈশ্বরীয় উর্জায় সক্রিয় হয়ে যায়। আপনার এনার্জি ভরপুর হয়ে ওঠে, আর আপনি ভগবান শিবের উর্যার সঙ্গে যুক্ত হতে পারেন। ভগবান শিব যিনি ব্রহ্মাণ্ডের আঁধার তার দিব্য শক্তি আপনার অন্তর মনে গভীরভাবে নেমে আসে। তখন সেই পরিস্থিতিতে আপনি যা কিছু বলে থাকেন অথবা যেই বিচার আপনার মনে এসে থাকে সেগুলি মিথ্যা না হয়ে প্রচুর প্রভাবপূর্ণ হয়ে থাকে। আর আপনার বলা কথা সত্যি হয়। আপনার চেতনার স্তর দিব্যিও হয়ে ওঠে। চেতনার এই স্তর তখনই দিবিও হয় যখন সেই ব্যক্তি শিব ধানে লিন হয়ে যায় ও শিব ভক্তিতে সম্পূর্ণ ডুবে যায়।
তৃতীয় সংকেত:- শিব কৃপার তৃতীয় সংকেত হল আপনার যেই কর্ম গুলি বিফলে গিয়েছিল বা যেগুলি হবে হবে করেও হচ্ছিল না সেই কর্মগুলি পুনঃস্থাপিত হয়ে সফল হয়। আর যেই সমস্যা আপনার জীবনে ছিল তার কোন না কোন উপায় আপনি দেখতে পান। বন্ধুরা সকল ব্যক্তির জীবনে অনেক সমস্যা ও অনেক চ্যালেঞ্জ হয়ে থাকে। আর অনেকবার রাস্তা এমন খারাপ হয়ে থাকে সেই সময় ব্যক্তি কি করবে তা বুঝে উঠতে পারে না। আর এমত অবস্থায় যদি ভগবান শিবের কৃপা সেই ব্যক্তির উপর থাকে তবে ভগবান শিব তাকে কোন না কোন রাস্তা অবশ্যই দেখাবেন। আর এমনটা বেশি তখন হয় যখন আপনি শিব ভক্তিতে লিন থাকেন। তখন হঠাৎ করেই আপনার মাথায় এমন বিচার আসে যা আপনার সমস্যার সঙ্গে যুক্ত থাকে। আর সেই সমস্যা থেকে বের হওয়ার কোন না কোন রাস্তা আপনি অবশ্যই পান। এছাড়াও ভগবান শিবের কৃপার ফলে কিছু সংকেত আপনি এমনও পান যেগুলি আপনার সমস্যা থেকে আপনাকে বাইরে নিয়ে আসবে। এটা শুধুমাত্র ভোলেনাথের কৃপার জন্যই সম্ভব। যখন আপনার সমস্যা সমাধানের পথ আপনি পান তখন আপনার জীবন আরো সরল হয়ে ওঠে।
চতুর্থ সংকেত:- শিব কৃপার চতুর্থ সংকেত হলো আপনার ঘুম মুহূর্তেই ভাঙতে থাকবে বা ওই ব্রহ্মমুহূর্তেই আপনার চোখ খুলে যাবে। বন্ধুরা ব্রহ্মমুহূর্ত একটি এমন দিব্যিও মুহূর্ত যেই সময় সকল পরমসত্তা তথা পজেটিভ শক্তিগুলি পুরো ব্রহ্মাণ্ডে ছড়িয়ে থাকে। এমন সময় যদি ব্যক্তির ঘুম প্রতিদিনই আপনা থেকেই ভেঙে থাকে তাহলে এটা কোন সাধারণ কথা নয়। এটা সংকেত বহন করে যে আপনি ভগবান শিবের উর্যার সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। আর ব্রম্ম্য মুহূর্তে দিবিও শক্তির আওয়াজ আপনার কানে পৌঁছায় যার ফলে আপনার চোখ খুলে যায়। এমন হলে আপনাকে খুব শিগ্রই বুঝে নেওয়া উচিত ভগবানের আশীর্বাদ আপনার উপর রয়েছে। আপনাকে সেই সময়টি ঘুমিয়ে একেবারেই নষ্ট করা উচিত নয়। বরং ঈশ্বরীয় ইচ্ছাটিকে বুঝে নিয়ে এই সময়টির পুরো লাভ উঠিয়ে নিন আপনি। আর ভগবানের ভক্তিতে নিজেকে সোপে দিন।
পঞ্চম সংকেত:- স্বপ্নের মধ্যে যদি আপনি শিবলিঙ্গ দেখেন অথবা শিবালয় দেখেন কিংবা ধরুন আপনি শিবলিঙ্গের উপর জল অর্পিত করছেন এমনটা দেখেন তাহলে এটা একটি খুব বড় সংকেত ভগবান শিবের কৃপার। বন্ধুরা যদি এই স্বপ্ন আপনি দেখে থাকেন তাহলে আপনি খুবই ভাগ্যশালী। এছাড়াও ভগবান শিবের প্রতীক চিহ্ন যেমন - রুদ্রাক্ষ, ত্রিশূল, মস্তকের চন্দ্রমা ইত্যাদি যদি স্বপ্নের মধ্যে আপনি দেখে থাকেন তাহলে এটাও ভগবান শিবের কৃপার একটি বড় সংকেত। যদি এই ধরনের কোন জিনিস আপনি স্বপ্নেতে দেখে থাকেন তাহলে আপনাকে ভোলেনাথের ভক্তিতে নিজেকে আরও বেশি পরিমাণে লিন করে দিতে হবে। আর আপনি যদি এমনটা করতে পারেন তাহলে আপনার জীবনের যেই পরম লক্ষ্য রয়েছে অর্থাৎ ভগবান শিবির দেখা পাওয়া বা ভগবান শিবের সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করা - তা সম্পূর্ণরূপে পূর্ণ হবে।
তো বন্ধুরা এই ছিল সেই পাঁচটি সংকেত, এগুলির মধ্যে যদি একটিও আপনি পেয়ে থাকেন তাহলে বুঝে নিন আপনি খুবই বিশেষ একজন মানুষ এবং আপনি একজন ভাগ্যশালী মানুষ। এমত অবস্থায় আরো গভীরভাবে আপনাকে ভগবান শিবের পূজার লীন হয়ে যেতে হবে।
তো বন্ধুরা আশাকরি আজকের এই লেখাটি পড়ে আপনারা সমৃদ্ধ হয়েছেন। ভালো লাগলে আপনজনের উদ্দেশ্যে অবশ্যই শেয়ার করবেন। আজ এখানেই শেষ করলাম। নমস্কার, ধন্যবাদ।। ঈশ্বর আপনার মঙ্গল করুক।
আরো পড়ুন:- স্বামী বিবেকানন্দের মতে - ব্রহ্মচর্য কি? || মানুষ্য জীবনে ব্রহ্মচর্য কেন এত গুরুত্বপূর্ণ? CLICK HERE
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
যদি আপনার কোনরূপ কোন প্রশ্ন থাকে কমেন্ট বক্সে অবশ্যই জানাবেন । পরবর্তী আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করে রাখবেন। এবং সকলের উদ্দেশ্যে শেয়ার করবেন।
If you have any questions or queries then comments in the comment box. To get regular updates subscribe us and please share this wisdom and knowledge.
( Please don't enter any spam link in the comment box.)
Thank You very much.
অমৃত কথা